চট্টগ্রাম থেকে-রফিক তালুকদার
চট্টগ্রামে দিন দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে মৃত্যুও। আইসিইউ শয্যা খালি নেই কোন সরকারি হাসপাতালে। খালি নেই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ শয্যাও।
শনিবার(১০জুলাই) সকালে করোনা আক্রান্ত ষাটোর্ধ্ব বাবাকে নিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে এসেছেন ছেলে হাসিবুর রহমান। বাবার তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখে দৌড়াচ্ছেন হাসপাতালের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত।
চিকিৎসকদের পরামর্শ, হাসিবের বাবার প্রয়োজন আইসিইউ। কিন্তু কোনো হাসপাতালেই খালি নেই আইসিইউ, এ যেন এক সোনার হরিণ।
হাসিবের আকুতি মিনতিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতলে।
শুধু জেনারেলে নয়, চট্টগ্রামের প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে গেলেই দেখা মিলবে এমন চিত্রের।
রোগীর স্বজনদের আকুতিতে ভারি হয়ে উঠছে প্রায় সব হাসপাতালের পরিবেশ।
একজন মৃত্যুপথযাত্রীকে বাঁচাতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরেকজন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রোগীর মৃত্যুর জন্য।
সরকারি হিসেব অনুযায়ী, চট্টগ্রামে আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৪৩টি। এর মধ্যে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১৮টি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০টি। গতকাল পর্যন্ত এসব শয্যায় রোগী ভর্তি ছিল ২১ জন। বাকি ১৫টি আইসিইউ শয্যার হিসেবে কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই।
এ দিকে প্রশাসনের শত চেষ্টার পরও লাগাম টেনে রাখা যাচ্ছেনা করোনার। কঠোর লকডাউন চলমান থাকলেও দিনে দিনে সাধারণ মানুষের আনাগোনা বেড়েই চলেছে, রাস্তায় নামতে শুরু করেছে রিকশা সিএনজির পাশাপাশি প্রাইভেট গাড়ীও। সাধারণ খেটে খাওয়া জনগোষ্টিকে কিছুতেই আটকে রাখা যাচ্ছেনা ঘরে। জীবন ও জীবিকার কাছে যেন তুচ্ছই করোনার ভয়।
চট্টগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৯০৭টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬০৩ জনের। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৬৪ হাজার ২৯৯ জন। এইদিন করোনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (১০ জুলাই) সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত তথ্যে এসব জানানো হয়।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। এত পদক্ষেপ নেওয়ার পরও সচেতন করা যাচ্ছে না সাধারণ মানুষকে।