সালাহ উদ্দিন সৈকত(গাজীপুর প্রতিনিধি)
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ঢালজোড়া ইউনিয়নের বাংগুরি গ্রামে এক মাস ধরে কোরবান আলী (৭০) নামের এক মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সড়কে ঘর তুলে অবরোধ করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।যাতায়াতের সড়ক থেকে টিনশেডের ঘরটি সরিয়ে নিতে কালিয়াকৈর থানায় প্রতিপক্ষ পাঁচজনের নামে একটি মামলা করেন।মুক্তিযোদ্ধা মামলায় বড় ভাইয়ের দুই ছেলে শাহআলম, জাকির হোসেন,একই গ্রামের রশিদ খানের ছেলে সজিব, জাকির হোসেনের স্ত্রী রুলিয়া আক্তার ও রশিদ খানের স্ত্রী সুরিয়া বেগম।এ ঘটনায় কোরবান আলী ১৬ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট সড়কটির প্রতিবন্ধকতা অবমুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি আবেদন করেন।বাংগুরি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ও (সেনাবাহিনীর অব. ওয়ারেন্ট) অফিসার কোরবান আলীর সঙ্গে তার বড় ভাই সানোয়ার হোসেনের জমিসংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। প্লটের দক্ষিণ পাশে বড় ভাই সানোয়ার হোসেন পাকা ঘরবাড়ি তুলে এবং ছোট ভাই মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলী ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করে আসছেন।কিন্তু জমিসংক্রান্ত বিরোধে কোরবান আলী পাশের চাচাতো ভাইয়ের বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করলেও কিছুদিন আগে তার চাচাতো ভাইয়ের পরিবারের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যদের ঝগড়া হয়।এতে চাচাতো ভাইয়েরা বাড়ির ওপর দিয়ে যাতায়াত করতে নিষেধ করে দেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের।ফলে বড় ভাইয়ের ঘরের পশ্চিম পাশ দিয়ে প্রায় চার ফুট খালি জায়গা দিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়ার জন্য সড়ক তৈরি করতে চেষ্টা করেন।কিন্তু ওই মুক্তিযোদ্ধার ভাতিজা জাকির হোসেন,শাহআলম মিলে সেই যাতায়াতের সড়কের ওপর ১ মার্চ একটি টিনশেডের ঘর ও একটি টয়লেট তৈরি করে সড়কে যাতায়াত বন্ধ করে দেন। ফলে মুক্তিযোদ্ধা নিজের বাড়ি থেকে বের হওয়ার কোনো সড়ক না থাকায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এ নিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যরা একাধিকবার গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন।এ বিষয়টি মীমাংসার জন্য থানা পর্যন্ত গড়ায়।ওসি মনোয়ার হোসেন চৌধুরী দু’পক্ষকে ১৩ মার্চ থানায় ডাকেন।এতে মুক্তিযোদ্ধা কোরবান আলীর পক্ষ হাজির হলেও ভাতিজা শাহআলম ও জাকির হোসেন হাজির না হওয়ায় পাঁচজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।
ঢালজোড়া ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান জানান, মুক্তিযোদ্ধার সড়ক বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে একাধিকবার গ্রাম্য সালিশের তারিখ দিলেও একপক্ষ মীমাংসায় রাজি হয়নি। ফলে বিষয়টি এখন আইন আদালতের দারস্থ হয়েছে।
অভিযুক্ত জাকির হোসেন বলেন,ছোট চাচা কোরবান আলীর সম্পদ বেশি থাকলেও আমার জমির ওপর দিয়ে সড়ক নিতে চেষ্টা করেন।কিন্তু সড়কের ওই জমি পেছন থেকে দেওয়ার কথা বললেও তিনি দিতে রাজি হননি।ফলে আমি আমার বাড়ির পশ্চিম পাশ থেকে গত এক মাস আগে টিনশেডের ঘর তুলে বসবাস করছি।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.কোরবান আলী জানান,ঘর তুলার সময় বাধার সৃষ্টি করা হলে ভাতিজারা লাঠিসোটা দিয়ে আমাকে মারধর করে জখম করে।পরে আমার যাতায়াতের সড়কটি একটি টিনশেড ঘর তুলে যাতায়াত বন্ধ করে আমাদের পরিবারের সব সদস্যকে অবরোধ করে রাখে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.মনোয়ার হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান,এ ঘটনায় দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হলে বিবাদী পক্ষ শাহআলম ও জাকির হোসেন আসেননি।ফলে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা নেওয়া হয়েছে।