সালাহ উদ্দিন সৈকত(গাজীপুর প্রতিনিধি)
গাজীপুরে জেলার শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকায় তিন শতাধিক পরিবারের মাঝে বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে।রবিবার দুপুরে সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বঝায় রেখে বসুন্ধরার এই ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
বসুন্ধরার ঈদ উপহার সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোন্দকার ইমাম হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য শেখ আবদুল লতিফ,শ্রীপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম মাহফুল হাসান হান্নান।এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লিয়াকত আলী দুলাল,শ্রীপুর উপজেলা শাখা শুভ সংঘের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাজাহারুল ইসলাম হিরণ,টেপিরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সেলিম আহমেদ,আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর মোড়ল,গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয় সম্পাদক মাহবুব হাসান,যুবলীগ নেতা পিন্টু আকন্দ,ছাত্রলীগ নেতা কাইয়ুম শেখ প্রমুখ।
আলোচনা সভার আগে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর খাসপাড়া গ্রামের জুলেখা বেগমের (৫৭) স্বামী নিরুদ্দেশ প্রায় দেড় যুগ ধরে।একমাত্র ছেলেও মায়ের কোনো খোঁজ রাখেন না।এতকাল এ-বাড়ি সে-বাড়ি ঝিয়ের কাজ করায় খাওয়া-পরার ভাবনা ছিল না তাঁর।কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে অসুস্থ তিনি।একটি হাতও অবশ।তাঁর একার সংসারটি চলে মানুষের দয়ার দানে।গতকাল রবিবার সাতখামাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ বসুন্ধরার ঈদ উপহার সামগ্রী পেয়ে আনন্দে কেঁদে ফেলেন জুলেখা। তিনি বলেন,‘অত কিছু কেউ কুনুদিন দিছে না।ঈদে আর চিন্তা নাই।যে দিছে আল্লাহ হেরে (তাঁকে) আমার মাতাত (মাথায়) যত চুল তত পরমাই (আয়ু) দিক।’
দুর্লভপুর গ্রামের ছাফিরন খাতুনের (৬৮) দিনমজুর স্বামী মারা গেছেন কয়েক বছর আগে।একমাত্র ছেলেও শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তাঁর দুঃখের শেষ নেই।তাঁর কাছে ঈদও অন্য দিনগুলোর মতই। কিন্তু বসুন্ধরার ঈদ উপহার পেয়ে তাঁর মুখে হাসি ফোটেছে। তিনি বলেন,‘অতগুলাইন জিনিস পাইয়া আমি যেরুম খুশি অইছি,যে দিছে পরকালে আল্লাহ হেরে (তাঁকে) খুশি কইরা দিব।আমি নমাজ পইড়া হের লাইগ্যা দোয়া হরাম।আল্লাহ হের (তাঁর) অনেক ভালা হরব।’
জুলেখা আর ছাফিরনই নন,শ্রীপুর পৌর এলাকা,বরমী, তেলিহাটী ও কাওরাইদ ইউনিয়নের দরিদ্র রোগী,দুস্থ বিধবা,প্রতিবন্ধী ও উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তিসহ ভিক্ষুক,দিনমজুর,হকাররা পেয়েছেন বসুন্ধরা গ্রুপের দেওয়া ঈদ উপহার সামগ্রী।এই উপহার সামগ্রী পেয়ে বেজায় খুশি অসহায় ওই মানুষজন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খোন্দকার ইমাম হোসেন বলেন, ‘অভাবী মানুষ জন আজ এই ঈদ উপহার সামগ্রী পেয়ে কতোটা খুশি হয়েছে।তা তাদের দেখলেই বোঝা যায়।এর চেয়ে ভালো কাজ আর হয় না।বসুন্ধরা গ্রুপকে আমি ধন্যবাদ জানাই।’
আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ সব সময়ই দেশ ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে।গত বছর করোনা শুরুর পর থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ হাত খুলে এগিয়ে এসছে।প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে।দেশজুড়ে সহায়তার হাত বাড়িয়েছে।বসুন্ধরার মত হাত খুলে সমাজের উচ্চবিত্তরাও যদি এগিয়ে আসত,দেশে অভাব থাকত না।আমি বসুন্ধরা পরিবারকে ধন্যবাদ জানাই।’