সালাহ উদ্দিন সৈকত(গাজীপুর প্রতিনিধি)
গাজীপুরের শ্রীপুরে স্ত্রী-সন্তান সহ গুরুতর আহত রোগীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে মাওনা চৌরাস্তার পদ্মা হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল অ্যান্ড ট্রমা সেন্টারে এর কতৃপক্ষ বিরুদ্ধে।শুক্রবার( ১৯ মার্চ)শ্রীপুরে মাওনা চৌরাস্তার পদ্মা হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক হাসপাতাল অ্যান্ড ট্রমা সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে।খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
জানা যায়,শ্রীপুরের নয়নপুর এলাকার মীর সিরামিক কারখানার টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করেন ঝালকাঠির রমানাথপুর গ্রামের আবদুল লতিফ তালুকদারের ছেলে কুদ্দুস তালুকদার।বৃহস্পতিবার বিকেলে কাজ করতে গিয়ে তার বাঁ হাঁটুর নিচের অংশে মাংসপেশিতে ছোট্ট এক টুকরা লোহা ঢুকে পড়ে।রাতেই ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে লোহার টুকরা বের করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন সেখানকার চিকিৎসক।আহত কুদ্দুস জানতে পারেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক(অর্থোপেডিক ও সার্জন)ডা. মোফাখ্খারুল ইসলাম রানা শুক্রবার চেম্বার করেন মাওনার ওই হাসপাতালে। অসহ্য যন্ত্রণা নিয়েই স্ত্রীর কাঁধে হাত দিয়ে কুদ্দুস চিকিৎসক ডা. মোফাখ্খারুল ইসলাম রানার কাছে আসেন।৭শ টাকা ভিজিট পরিশোধ করে তার কাছে যান। কিন্তু কুদ্দুসের কোনো চিকিৎসা ওখানে হবে না বলে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন ডা. রানা।কুদ্দুসের স্ত্রী রুবি আক্তার জানান,যেহেতু ডাক্তার কোনো ব্যবস্থাপত্র ও চিকিৎসা দেননি সে কারণে বের হয়ে তার স্বামী ভিজিটের ৭শ টাকা ফেরৎ চান। এই অপরাধে স্ত্রী ও সন্তানের সামনেই প্রকাশ্যে যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকা কুদ্দুসের ওপর হামলা করে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ও তার লোকজন।বেদম পিটুনি দিয়ে রক্তাক্ত করে ফেলে রাখে।এতে নেতৃত্ব দেন তুহিন আহমেদ।ভিজিটিং কার্ডে তিনি নিজের নামের পর ‘ম্যানেজার’ লিখে রেখেছেন। তার নেতৃত্বেই হাসপাতালের ভেতরে চলে এই হামলা।
এক পর্যায়ে কুদ্দুসের স্ত্রী ও সন্তানকেও মারপিট করা হয় বলে তার শ্যালক আবদুল হান্নান অভিযোগ করেন।স্থানীয়রা জানান,শুধু শুক্রবার এ হাসপাতালে অতিরিক্ত লোক আনা হয়।এ দিন রোগীর চাপ বেশি থাকে বলে এ ব্যবস্থা। যাতে কোনো রোগী কথা না বলতে পারে,অনিয়মের প্রতিবাদ না করতে পারে।শ্রীপুর থানার এসআই আমজাদ হোসেন বলেন,ঘটনাস্থলে তিনি গিয়ে তদন্ত করেছেন।কুদ্দুস নামে এক রোগীকে মারপিট করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক(অর্থোপেডিক ও সার্জন)ডা. মোফাখ্খারুল ইসলাম রানা বলেন,ঘটনার পরপরই তিনি চেম্বার থেকে বেরিয়ে কুদ্দুসকে নিয়ে তার কক্ষে বসান।এই অপরাধের বিচার হওয়া উচিৎ।বিনা পয়সায় পিজি হাসপাতালে কুদ্দুসের চিকিৎসা করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,একটি অ্যাম্বুলেন্সে দুপুরের পরপরই তাকে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।ঘটনার পর তুহিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা পালিয়ে যায়।হাসপাতালের মালিক সেলিম দৈনিক আমাদের সংগ্রাম কে বলেন,এটা একটা অনাকাঙ্খিত ঘটনা।ইতিমধ্যে অভিযুক্ত তুহিনকে হাসপাতাল থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
গাজীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা.খায়রুজ্জান দৈনিক আমাদের সংগ্রাম কে বলেন,বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।