মোঃ সিরাজুল মনির চট্টগ্রাম ব্যুরো।
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের করা বিক্ষোভ মিছিলে হেফাজত-পুলিশ সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত তিন ছাত্র ও এক পথচারীর পরিচয় মিলেছে।
নিহতরা শিক্ষার্থীরা হলেন— হাটহাজারীর আল জামাতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার মাস্টার্সের (দাওয়ারে হাদিস) শিক্ষার্থী কাজী মিরাজুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম এবং জামিল।
নিহত পথচারীর নাম মো. মিজান। তিনি একটি দর্জি দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আরও ৪ জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ভর্তি হয়েছেন। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (চমেক) পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই শিলব্রত বড়ুয়া বলেন, ‘হেফাজতের বিক্ষোভ চলাকালে হাটহাজারী থেকে গুলিবিদ্ধ চারজনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া অর্ধশতাধিক আহত হেফাজতের নেতাকর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া দুপুরে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে তারা থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে হেফাজতের কয়েকজন নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়। তাদের মধ্যে ৪ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হেফাজত অনুসারী মুসল্লিরা মিছিল নিয়ে হাটহাজারী থানার দিকে এগুতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় হেফাজত অনুসারীদের পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ প্রথমে টিয়ারশেল ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে রাবার বুলেট ছুঁড়তে শুরু করে পুলিশ। এতে সাত মাদরাসাশিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অতর্কিত হামলা চালায় ১৫-২০ জনের একদল যুবক। এতে আহত হয় ওয়ার্ড সর্দার মো. এনায়েত।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দুপুরে হাটহাজারীতে সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জনকে হাসপাতালে আনার পর জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মরদেহের সঙ্গে থাকা স্বজনরা জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালিয়েছে।’
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হেফাজত অনুসারীরা মিছিল করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে তারা হাটহাজারী থানায় প্রবেশ করে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। সংঘর্ষ চলাকালে রাস্তায় পুলিশ অবস্থান নিলে হাটহাজারী মাদরাসা থেকে আগত অনুসারীরা নিয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।