মাইকেল নংরুম, নিজস্ব প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বেরেঙ্গা পুঞ্জির চারটি পানজুমের প্রায় ৩ হাজার পান গাছ ও ৬০টি সুপারি গাছ কেটে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আল্লাদাত চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।ক্ষতিগ্রস্ত খাসিয়াদের দাবি, পান ও সুপারি গাছ কাটায় তাদের প্রায় পনেরো লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ও পুঞ্জি প্রধান (মান্ত্রী) অলমি পঃতাম গতকাল সোমবার আল্লাদাত চা বাগানের ব্যবস্থাপক সিরাজ উদ্দিন, পাহারাদার নূর উদ্দিন ও আব্দুস সামাদের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জনকে অজ্ঞাতনামা রেখে বড়লেখা থানায় লিখিত একটি অভিযোগ করেছেন। এদিকে খাসিয়াদের পান ও সুপারি গাছ কাটার খবর পেয়ে সোমবার দুপুরে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন, উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন আহমদ, বড়লেখা ইন্ডিজেনিয়াস পিপলস ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ শৰ্মা ও প্রচার সম্পাদক পাইলট মারলিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের বেরেঙ্গা পুঞ্জিতে ব্রিটিশ আমল থেকে ৬০টি খাসিয়া পরিবারের প্রায় ৫০০ জন মানুষ বসবাস করেন। বংশ পরম্পরায় তারা পানজুম ও সুপারি চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত সোমবার সকাল আনুমানিক ছয়টার দিকে আল্লাদাত চা বাগানের ব্যবস্থাপক সিরাজ উদ্দিনের নেতৃত্বে বাগানের পাহারাদার নুর উদ্দিন ও আব্দুস সামাদসহ কয়েকজন লোক বেরেঙ্গা পুঞ্জির দক্ষিণ পাশের খাসিয়াদের লাগানো চারটি পানজুমের প্রায় ৩ হাজার পান গাছ ও ৬০টি সুপারি গাছ কেটে ফেলে। বিষয়টি দেখে খাসিয়ারা বাগানের লোকজনকে বাধা দিতে গেলে তারা তাদের ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। পুঞ্জির লোকজন জানান, বাগানের লোকজন তাদের ৩ হাজার পান গাছ ও ৬০টি সুপারি গাছ কেটে ফেলেছে। তারা বিষয়টি দেখে বাধা দিতে গেলে বাগানের লোকজন দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে। যার কারণে ভয়ে তারা প্রতিবাদ করেননি। পরে পুঞ্জির লোকজন ছুটে এলে বাগানের লোকজন চলে যায়। এসময় তারা খসিয়াদের বাড়ি-ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে তাদের বেরেঙ্গা পুঞ্জি থেকে উচ্ছেদ করবে বলেও হুমকি দিয়েছে। এতে তারা আতঙ্কে রয়েছেন।অভিযোগের বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার বেলা দুইটায় আল্লাদাত চা বাগানের ব্যবস্থাপক সিরাজ উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান মঙ্গলবার দুপুরে বলেন, বেরেঙ্গা পুঞ্জিতে পান গাছ ও সুপারি গাছ কাটার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) জাহাঙ্গীর হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বেরেঙ্গা পানজুমের বেশ কিছু পান গাছ ও কয়েকটি সুপারি গাছ কে বা কারা কেটে ফেলেছে। ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা মিলবে তাদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।