পাওনা টাকা চাওয়ায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। জাহানপুর পাঁচকপাট এলাকার মৎস্য ব্যবসায়ী মামলার বিবাদী উপজেলার জাহানপুর ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জহুর উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন বলেন, ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৭২৮নং পিটিশনের বাদি ওই নারী একই এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার জেলে স্বামীর কাছে ব্যবসায়ীক দাদন দেয়া বাবদ আমি ১৩লাখ টাকা পাওনা রয়েছি। সে আমার মাছের আড়তে মাছ না দেয়ায় ওই টাকা ফেরত চাইলে উল্টো আমার বিরুদ্ধে তার স্ত্রী’কে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা দিয়ে আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন ও দাদনের ওই ১৩ লাখ টাকা না দেয়ার উদ্দেশ্যে হয়রানি করছে।
জানা যায়, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী মিথ্যা ধর্ষণ চেষ্টা মামলার সুষ্ঠ তদন্ত চেয়ে গত শনিবার সন্ধ্যায় শশিভূষণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। লিখিত ওই অভিযোগে হেলাল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ধর্ষণ চেষ্টা মামলার বাদির জেলে স্বামী ইলিশসহ অন্যান্য মাছ তার গদিতে দেয়ার শর্তে ২০১৮ সালের ২৪নভেম্বর এক চুক্তিপত্রের মাধ্যমে ১৩ লাখ টাকা দাদন নেন। লিখিত অভিযোগে হেলাল উদ্দিন আরো দাবি করেন, দাদনের ওই টাকা নিয়ে চলতি বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইলিশ মাছ দিয়ে লেনদেনের হিসাব না করেই ঘাটে ট্রলার রেখে ওই জেলে লাপাত্তা হয়ে যান। পরে বিষয়টি তিনি স্থানিয় মৎস্য আড়ৎ সমিতির সভাপতিকে অবহিত করলে তিনি দাদন নেয়া ওই জেলেকে শালিসে বসতে বললেও ওই জেলে কালক্ষেপন করে। অভিযোগকারী আরো বলেন, ফয়সালায় না বসে ওই জেলে তার স্ত্রীকে দিয়ে গত ১২নভেম্বর ভোলার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে হেলালের বিরুদ্ধে একটি মামলা দয়ের করান।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৯অক্টোবর শুক্রবার রাত ১২টায় ওই নারীর বসতঘরের টিন ছুটিয়ে হেলাল উদ্দিন ওই নারীকে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এদিকে ওই নারী “ট্রাইব্যুনালে’র ৭২৮ নং পিটিশনটিতে এবং স্থানিয় সংবাদকর্মীদের কাছেও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করে। কিন্তু মামলা সংক্রান্ত এফিডেভিটে ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামী ওই নারীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক “ধর্ষন করে” বলে উল্লেখ করেন। এঘটনা নিয়ে জাহানপুর এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। ওই নারীর প্রতিবেশি রহিমা বেগম জানান, মামলার বাদি ওই নারী তার স্বামীর সাথে হেলাল চৌধুরীর দেয়া দাদনের টাকা লেনদেনের বিষয়টি যদি বাঁদ দেয়া হয় তাহলে দায়েরকৃত “ধর্ষণ চেষ্টা” মামলাটি উঠিয়ে নিবেন বলে প্রতিবেশি রহিমা বেগমকে মোবাইল ফোনে জানান বলে দাবী করেন। এছাড়াও ফোন কলেরও একটি রেকর্ড ডকুমেন্ট পাওয়া যায় বলে হেলাল উদ্দিন চৌধুরী জানান। এছাড়াও ওই মামলার বাদির সাক্ষি মেয়ের জামাতা সংবাদকর্মীদের জানান, মামলায় উল্লেখিত ঘটনার দিন তিনি তার শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করলেও এঘটনা সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।
ধর্ষণ চেষ্টায় দায়েরকৃত মামলার বাদি ওই নারীর সঙ্গে কথা বললে ৩টি সিজনের মাছের উপরে নেয়া ট্রলারের জ্বালানী তৈল এবং জালসহ ৬ লাখ টাকার কথা সংবাদকর্মীদের কাছে শিকার করেন। তবে ওই নারী বলেন, ওই টাকার জাল ও আনুসঙ্গিক পণ্য সামগ্রী হেলাল উদ্দিন চৌধুরী দিলেও পরে হেলাল উদ্দিন তা আবার নিয়ে যান। রবিবার (২৯নভেম্বর) এ বিষয়ে শশিভূষণ থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন জানান, হেলাল উদ্দিন চৌধুরী থানায় একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য মামলার সুষ্ঠ তদন্ত চেয়ে থানায় বিবাদির দেয়া সাইনকৃত অভিযোগের অনুলিপি এবং উভয়পক্ষের ভিডিও রেকর্ড বক্তব্য ও ফোন কলের রেকর্ড,মামলার নথীপত্র,ব্যবসায়ীক লেনদেনের চুক্তিপত্রের ডকুমেন্ট প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
তৈয়বুর রহমান তুহিন চরফ্যাশন ভোলা।
মোবাঃ ০১৭৬৪৪৪৪৪৯৪