• শনিবার, ০১ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম
মনপুরায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু,নানা মহলের শোক প্রকাশ! ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটির ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত ভেড়ামারায় উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন’র ইফতার ও দোয়া মাহফিল বাংলাদেশ স্কুল বাহরাইনের উদ্যোগে মরহুম গোলাম রব্বানীর স্মরণে দোয়া ও ইফতার মাহফিল বাহরাইনে আল হেরা শিল্পী গোষ্ঠীর ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন – জো বাইডেন চতুর্থ মেয়াদে শেখ হাসিনা সরকার গঠন করবে – ব্লুমবার্গ হজ্ব যাত্রীদের নিবন্ধনের সময় বাড়ালেন ধর্ম মন্ত্রণালয় আ. লীগের নেতৃত্বেই দেশে ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে: ওবায়দুল কাদের পরিবেশ মন্ত্রীর নির্দেশের পর সড়কের কাজ শুরু

মাদকে সয়লাব রাজধানীর মিরপুর,সর্বনাশে এক ভেজাল মনিরই যথেষ্ট

দৈনিক আমাদের সংগ্রাম | পত্রিকা..... / ৩৮১ জন পড়েছে
প্রকাশিত সময়: শুক্রবার, ১৮ জুন, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকার ও আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান ঘোর মাদক বিরোধী অভিযানকে তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যেই নানা রকম মরণ নেশার রমরমা বানিজ্য চালিয়ে আসছে মিরপুরের কিছু চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সমন্বয়ে গঠিত সংঘবদ্ধ মাদক কারবারীরা। মাদকের জোয়াড়ে ভাসছে রাজধানীর গোটা মিরপুর।
বিশেষ করে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের মিরপুর মডেল থানা এলাকার ২ নম্বর সেকশনের এইচ ব্লকের ১ নম্বর রোডের ২১ নম্বর বাড়ির মালিক সিরাজুল হকের ছেলে, একাধিক মামলার আসামী, চিহ্নিত ও দূর্ধর্ষ কিশোর গ্যাংয়ের নেতা, মাদক ব্যবসায়ী শাহ মনির ওরফে মনির ওরফে ভেজাল মনিরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। তার নিয়ন্ত্রণেই মিরপুরে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ষাট-সত্তর জন বখাটে কিশোর -কিশোরীর সমন্বয়ে গঠিত একটি ভয়ংকর কিশোর গ্যাং ও সুবিশাল মাদক সিন্ডিকেটের হোতারা।

 

তবে শাহ্ মনির ওরফে ভেজাল মনিরের একজন মাদক সম্রাট হয়ে ওঠার পেছনে রয়েছে ভিন্ন রকমের একটি রোমহর্ষক গল্প। তিনি শুরুতে শখের বশে নিজে টুকটাক মাদক সেবন শুরু করেন। ধীরে ধীরে বিভিন্ন প্রকার মাদকে চরমভাবে আসক্ত হয়ে পড়লে মাদক সেবনে প্রয়োজনীয় অর্থ যোগাড় করতেই একপর্যায়ে তিনি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে এই এলাকায় পুরোদস্তুর একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছেন তিনি।
তার একনিষ্ঠ সহযোগী এইচ ব্লকের ১ নম্বর রোডের চিহ্নিত সেই ববির মাদকের স্পট বর্তমানে নিয়ন্ত্রণ করেন এই ভেজাল মনির। মিরপুরের কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী ফাতেমা ওরফে ফতের নিকট থেকেও পাইকারীমূল্যে মাদকদ্রব্য নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সর্বরাহ করছেন মনির।
এদিকে মিরপুর থানা এলাকার এ ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ভেজাল মনিরের সহায়তায় দেদারছে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী পাখীর দ্বীতিয় স্ত্রী আজমেরী গং।

 

ভেজাল মনিরের নেতৃত্বে কথিত ড্যান্সার এই আজমেরী,সাইফুল, পিংকি ওরফে বৃষ্টি, পাখির ভাই বাদলের স্ত্রী মুক্তা ও তাদের দেবর গালীব বর্তমানে উল্লেখিত এলাকায় ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকের রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই আজমেরীও বিশাল বড় সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় ডিজে ড্যান্স করার অজুহাতে মাদকের বড় বড় গডফাদারদের নিকট থেকে পাইকারী মূল্যে ইয়াবা সংগ্রহ করেন এই আজমেরী। পরে সেগুলো ভেজাল মনিরের মাধ্যমে বিভিন্ন ছোট বড় মাদক ব্যবসায়ীদেরকে সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে।
এলাকায় সংঘটিত বেশিরভাগ ঝামেলায় শাহ মনির ওরফে ভেজাল মনিরের সরাসরি সম্পর্ক থাকায় এলাকাবাসীর মুখে মুখে এমনকি পুলিশ রেকর্ডেও তার নাম ভেজাল মনির হিসেবে পরিচিত । তার বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। মামলা নম্বর-০৩। তার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় একটি অপহরণ মামলা রয়েছে। তেজগাঁও থানার মামলা নম্বর ৩৯। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

 

অপরদিকে এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, সমগ্র মিরপুরে পাইকারী ইয়াবা ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি ও কুখ্যাতি রয়েছে শাহ আলী থানার নিউসি ব্লকের মাদক সম্রাট খ্যাত কাউন্টার রাসেলের। স্বঘোষিত মাদক সম্রাট কাউন্টার রাসেলের এই বিশাল মাদক সম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণে নিজের ভাই রাজীবসহ ২০/২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট সক্রিয়ভাবে নিয়োজিত রয়েছে। তাদের মধ্যে এই শাহ মনির (ভেজাল মনির),বাবু (হাতি বাবু),মাদক সম্রাজ্য নিয়ন্ত্রনে রাসেলের ডান হাত সবুজ (ফরমা সবুজ), সুমন (পিচ্চি), মতি মিয়ার ছেলে, ইসমাইলের ছেলে বিপ্লব, বেবীর ছেলে মাহী মিন, পাকনা লিটন, বদনের ভাগিনা সুজন অন্যতম।
রাসেলের নিউ সি ব্লকের নিজ ৪ তলা বাসা সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে খুচরা ইয়াবা বিক্রিসহ গোটা মিরপুরে পাইকারী ইয়াবা সরবরাহে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন এই মনির।

 

এছাড়া সম্প্রতি সাভার থানার একটি গণধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে জামিনে জেলহাজত থেকে বেড়িয়ে দারুসসালাম থানা এলাকার চিহ্নিত ও কুখ্যাত নামধারী সোর্স সোলেমান নতুন উদ্যমে শুরু করেছেন মাদক বানিজ্য। গোলারটেকের জাহাঙ্গীর, বর্ধনবাড়ীর ফয়সাল ও জসিম (ল্যাড়া জসিম) ফেন্সিডিল ও ইয়াবার রমরমা কারবার চালিয়ে আসছে। পালপাড়া এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামী জনি, জহুরাবাদের নবী, ছোট দিয়াবাড়ির নাসির, নয়ন, কাজল, পিয়াস (কালা গরু), বাবুর্চী বাড়ির টিটু, (ফর্মা টিটু), অলি, ওহাব, শিপলু, সামচু ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রিতে শীর্ষে রয়েছে।
দিয়াবাড়ির বিল্লাল, শফিক ও তার স্ত্রী, আরমান ও সুমন কথিত সোর্স জাকিরের নিয়ন্ত্রনে চালাচ্ছে ইয়াবা, গাঁজা, ইরোইনের রমরমা বানিজ্য। শাহ্ আলী থানা এলাকার শাকিল (ছ্যাঙ্গা শাকিল), জয়নাল (ফিটিং জয়নাল), মিনু, দাত ভাঙ্গা রুবেল, লুঙ্গী জামাল, চিড়িয়াখানা রোডের সামাদ, গুদারাঘাটের বাবু ও কিংশুকের গেইটে পারুলির চিহ্নিত মাদক স্পটে দেদারসে মাদক বেচাকেনা হচ্ছে। ডি ব্লকের ৩ নম্বর রোডে হাতেমের ছেলে ছাদ্দাম, হাতকাটা মামুন, ভাঙ্গারী কাকা ভাঙ্গারী ব্যবসার আড়ালে আশপাশের এলাকায় পাইকারী ইয়াবা সর্বরাহ করে আসছে। রয়েল সিটি, তুরাগ সিটির বেড়িবাধের ঢালে ছোট ছোট খুপরি ঘর তৈরী করে ও কাউন্দিয়াসহ নৌকায় ভ্রাম্যমান ইয়াবা ও হেরোইনের ব্যবসা চালিয়ে আসছে হাবিব ওরফে গোল্ডেন হাবিব।

 

এ প্রসঙ্গে এইচ ব্লকের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,এই চিহ্নিত অপ্রতিরোধ্য কিশোর গ্যাং ও মাদক ব্যবসায়ীদের অত্যাচারে এলাকাবাসী চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। মাদকের সহজলভ্যতায় এলাকার স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ঝুকে পড়ছে মাদকের দিকে। তাছাড়া স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীরাসহ এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টসে কর্মরত নারীদের আসা যাওয়ার পথে ইফটিজিংসহ নানা হয়রানীর শিকার হতে হয় মাদকসেবীদের হাতে। চিহ্নিত এই কিশোর গ্যায়ের নেতৃত্বে এলাকায় চুরি, ছিনতাই আনুপাতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিনীত অনুরোধ করছি, অতিসত্ত্বর এসব চিহ্নিত মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে এলাকাবাসীকে উদ্ধুদ্ধ সমস্যা থেকে পরিত্রানের ব্যবস্থা করুন।
এবিষয়ের মিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুস্তাজিরুর রহমান বলেন, এবিষয়ে আমার থানায় কেউ অভিযোগ করেননি। তবে পুলিশের অনুসন্ধানে মাদক ব্যবসায়ী প্রমাণিত হলে অচিরেই অভিযান পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযোগ্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
❌ নিউজ কপি করা নিষিদ্ধ ❌