প্রজিত সুহাস চন্দ, নোয়াখালী প্রতিনিধি
কক্সবাজারের উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ১১টি বাস নোয়াখালীর ভাসানচরের দিকে রওনা দিয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতা থেকে প্রাণে বাঁচতে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গার বাংলাদেশে আসার পর পেরিয়ে গেছে ৩৯ মাস। এর মাঝে দুই দফা প্রত্যাবাসনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হলেও রোহিঙ্গাদের রাখাইনে পাঠানোর চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এমন এক পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের শিবিরের ওপর চাপ কমানোর অংশ হিসেবে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলকে ভাসানচরের দিকে পাঠানো হলো।
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ার শিবিরে এখন বসবাস করছে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকের বিরোধিতার পরও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে সরকার। জোয়ার ও জলোচ্ছ্বাস থেকে সেখানকার ৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রক্ষা করতে ১৩ কিলোমিটার বাঁধ দেওয়া হয়েছে। সেখানে এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে পাঠানোর বিষয়ে সরকার যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক এমন সময়ে গতকাল বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরের বিষয়ে একই দিনে বিবৃতি দিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
দুটি মানবাধিকার সংস্থাই রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের সিদ্ধান্তটি আপাতত স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে ৪ হাজার রোহিঙ্গার একটি তালিকা তৈরি করেছে যাদেরকে ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে।
বাংলাদেশের সরকারের উচিত একটি স্বচ্ছ স্থানান্তর প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শরণার্থীদের বুঝে-শুনে সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এবং দ্বীপটিতে যাওয়া-আসার অনুমতি সাপেক্ষে স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
সেই সাথে জাতিসংঘের আহ্বান অনুযায়ী একটি স্বাধীন কারিগরি এবং সুরক্ষা বিষয়ক মূল্যায়ন পরিচালনা করা উচিত।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্র্র্যাড অ্যাডামস বলেন, “মানবিক পরিস্থিতি বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের সম্মতি বা সবুজ সংকেত ছাড়া শরণার্থীদের ভাসান চরে স্থানান্তর না করতে বাংলাদেশ সরকার জাতিসংঘের কাছে যে ওয়াদা করেছিল তা থেকে সরে আসছে।”