• রবিবার, ০৪ জুন ২০২৩, ১১:২৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
নবীনগরে ব্যারিস্টার জাকির আহাম্মদ কলেজে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত- জামালপুর জেলার মেলান্দহে বারি উদ্ভাবিত কৃষি যন্ত্রপাতির প্রশিক্ষণ নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ থেকে ১০০ শয্যা করা হবে; সাংসদ এবাদুল করিম বুলবুল বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা জুড়ী উপজেলা শাখার কমিটি অনুমোদন ভোলা-১ আসনে তোফায়েল ভাইয়ের বিকল্প নেই – জহুরুল ইসলাম নকিব কমলগঞ্জের শমসেরনগরে এসএসসি পরীক্ষার্থী ছুরিকাঘাতে আহত: প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করলেন আজমত উল্লা মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে পুণরায় সভাপতি সেলিম, সম্পাদক সুমন ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবীতে খাগড়াছড়িতে বিএনপির জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত  জেলা পর্যায়ে মেধা প্রতিযোগীতায় সুজানগর গার্লস একাডেমির ছাত্রী মার্জিয়া রহমান নিহার কৃতিত্ব। 

শতাব্দীর শ্রেষ্ঠতম মহামানব ছিলেন আল্লামা ছাহেব কিব্বলা ফুলতলী রঃ -এইচ.এম.কাওছার আহমদ 

দৈনিক আমাদের সংগ্রাম | পত্রিকা..... / ২৩০ জন পড়েছে
প্রকাশিত সময়: শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১

লেখা-লেখি ডেস্কঃ 

” কীর্তি মানের মৃত্যু নেই ” আধ্যাত্মিক

জামানার শ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ,শামছুল উলামা আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিব্বলা রহঃ ছিলেন একজন খোদা ভীরু,দ্বীন ইসলামের অন্যতম একজন খাদিম।তিনি ১৯১৩ সালে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার বাদেদেওরাইল ঐতিহ্যবাহী ফুলতলী গ্রামে এক প্রখ্যাত আলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মুফতি মাওলানা আব্দুল মজিদ চৌধুরী (র.)’র ও সুযোগ্য সন্তান আল্লামা আব্দুল লতিফ চৌ (রাহ.) আমল- আখলাকে তিনি ছিলেন সুন্নতে নববীর আদর্শে আদর্শীত একজন ইনসানে কামিল। তিনি যেমনি ইসলামের একজন সফল খাদেম ছিলেন তেমনি একজন সফল সমাজ সংস্কারক ও মানবতাবাদি ছিলেন । আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অন্যতম একজন দিশারী আল্লামা ছাহেব কিব্বলা ফুলতলী (রাহ.) হযরত শাহজালাল ইয়ামনি (রাহ.)’র সফরসঙ্গী ৩৬০ আওলিয়ার অন্যতম হযরত শাহ কামাল (রাহ.)’র বংশধর। তিনি আমলে সালেহীন এর মাধ্যমে তাযকিয়ায়ে নাফসের মেহনতে উচ্চাসনে আসীন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন।

 

শিক্ষাজীবনের প্রারম্ভে তিনি তার চাচাতো ভাই ফাতির আলীর নিকট লেখাপড়া করেন। অতঃপর ফুলতলী মাদ্রাসায় ভর্তি হন। ১৩৩৮ বঙ্গাব্দে তিনি বদরপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। এরপর রামপুর আলিয়া ও মাতলাউল উলুম মাদ্রাসায় হাদিস শাস্ত্রে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। ১৩৫৫ হিজরীতে তিনি মাতলাউল উলুম মাদ্রাসায় ১ম শ্রেণীতে প্রথম স্থান অধিকার করে হাদিস শরীফের সর্বোচ্চ সনদ অর্জন করেন। তার গুরুদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আল্লামা খলিলুল্লাহ রামপুরী ও আল্লামা ওয়াজিহুদ্দীন রামপুরী (র.)। এ ছাড়া তিনি শাহ আব্দুর রউফ করমপুরী ও শায়খুল কুররা আহমদ হেজাযী এর নিকট থেকে ইলমে কিরাতের সনদ অর্জন করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি শায়খুল কূররার শেখ আহমদ হেজাজী মক্কী (র.) এর নিকট থেকে ইলমে কিরাতের সর্বোচ্চ সনদ অর্জন করেন।

 

১৯৪৬ সাল থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত তিনি বদরপুর আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৫৪ সাল থেকে গাছবাড়ী জামেউল উলুম মাদ্রাসায় অধ্যাপনা করেন। এ সময় মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ ও অধ্যক্ষের দায়িত্ব পলন করেন। এরপর সৎপুর কামিল মাদরাসা, ইছামতি ও বাদেদেওরাইল ফুলতলী আলিয়া মাদ্রাসায় হাদিস শাস্ত্র অধ্যাপনা করেন। এ ছাড়া তিনি শুদ্ধভাবে পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত শিক্ষাদানের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন দারুল ক্বিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট। দেশ বিদেশে প্রতিষ্ঠা করেন অসংখ্য মসজিদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এবং অর্থনৈতিক ভাবে দিশেহারা, অসহায় গরীব-দুঃখী মানুষের পাশে দাড়ানো জন্য নিজ হাতে প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তালামীযে ইসলামিয়া, আনজুমানে আল-ইসলাহ, মুসলিম হ্যান্ডস বাংলাদেশ সহ অসংখ্য সংগঠন যাহা সবসময় দ্বীন ইসলাম এবং আর্ত-মানবতার সেবায় নিবেদিত।

 

আল্লামা ছাহেব কিব্বলা ফুলতলী রঃ ছিলেন দ্বীন ইসলামের এক মর্দে মুজাহিদ

অন্যায়ের বিরুদ্ধে অাপোষহীন সৈনিক,যার ডাকে লক্ষ কোটি সুন্নী জনতা ঈমানী চেতনায় সাড়া দিয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে যাপিয়ে পড়েন। দীনের ব্যাপারে তিনি ছিলেন আপোষহীন। দীনের প্রতি আঘাত আসলে তিনি কখনোই নীরব থাকতেন না।অমিত সাহস বুকে নিয়ে বজ্রকন্ঠে প্রতিবাদে করতেন।দীন প্রচারের ক্ষেত্রে তালিম- তরবীয়তে বেশির ভাগ সময়ই তিনি সায়্যিদুল মুরসালীন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শান-মর্যাদা,তাঁর মাধ্যমে জগৎবাসীর উপকৃত হওয়া,তাঁকে ভালোবাসার ইহ-পারলৌকিক ফায়দা ইত্যাদি বর্ণনা করতেন।তার রচিত প্রিয় নবী (সাঃ) এর প্রতি মহব্বতের উজ্জ্বল নিদর্শন হচ্ছে কালোত্তীর্ণ কাব্যগ্রন্থ ” নালায়ে কলন্দর “। নালায়ে কলন্দরে রাসূলে পাক (সা.)এর প্রতি তাঁর ভালোবাসার নমুনা নিম্নোক্ত কবিতায় ফুটে ওঠে।

” নবীজীর পদধূলি হোক সুরমা এই দু’ চোখে

মনের যতো কালিমা ঘুচুক জিয়ারত আলোকে।৯

আল্লাহর রাসূল সাঃ এর সাথে সম্পর্কিত কিছু পেলেও তিনি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদান করতেন। বিশেষত সায়্যিদগনের সাথে তাঁর আচরণ ছিল নযীরবিহীন। মদিনার মাটি, ধূলো-বালিকেও তিনি সম্মানের চোখে দেখতেন। তাঁর রচিত নালায়ে কলন্দরে চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে…

” বিশ্বভুবন থেকে প্রিয় খাক মদীনার

সে খাক তরে ফিদা যেথায় পিয়ারা খোদার।১০

 

আল- কুরআন বিশুদ্ধ করে পড়ার জন্য তাঁহার যে অবদান বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে আছে তাহা যেন কিয়ামত পর্যন্ত জারি রাখেন দয়াময়। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর অনুপম আর্দশে আর্দশীত করার জন্য তাহাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান ইয়াকুবিয়া হিফযুল কুরআন বোর্ডসহ তাঁহার পৃষ্ঠপোষকতার প্রতিষ্ঠান গুলো নিরলস ভাবে দক্ষ হাফিজ,আলিম সাহেব গন তৈরির জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

 

আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিব্বলাহ ১৬ ই জানুয়ারি ২০০৮ সালের বুধবার প্রথম প্রহরে রাত (২ টায়) লক্ষ-কোটি মুরিদীন-মুহিব্বীনগন কাঁদিয়ে চলে গেলেন না-ফিরার দেশে।ঐদিন রাত শেষ হওয়ার সাথে সাথে লোকে লোকারণ্য সিলেট বিভাগের জকিগঞ্জের গোটা বালাই হাউর। ঐদিন বিকাল ৪টায় বালাই হাওরে জানাযার নামায অনুষ্ঠিত হয়।জানাযায় অংশগ্রহণ করেন লাখো লাখো মুরিদীন-মুহীব্বীন, সহ ছাহেব কিব্বলা রহঃ এর লখতে জিগরগন।

 

ধাপে ধাপে ২০০৮ সাল থেকে এপর্যন্ত ১২ তম ঈসালে সাওয়াব মাহফিল ২০২০ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবছর করোনার পাদুর্ভাবের কারনে ১৩ তম ঈসালে সাওয়াব মাহফিল খানেকার মধ্যে দিয়ে সমাপ্ত হয়েছে। দয়াময়ের নিকট আমাদের ফরিয়াদ তাঁহার মহান ওলীর দরজাকে আর ও বেশি করে বুলন্দ করিয়া দেন আমিন। এবং বিশ্বের মধ্যে করোনা নামক যে ভয়াবহ মহামারী -গজব দেখা দিয়েছে প্রিয় নবী সাঃ ও তাঁহার মহান ওলী -আউলিয়ার ওসিলায় দেশ-বিদেশের সকল মুমিন মুসলমানগণ কে হেফাজত করুন আমিন।

 

লেখক শিক্ষার্থীঃসিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
❌ নিউজ কপি করা নিষিদ্ধ ❌