সালাহ উদ্দিন সৈকত (গাজীপুর প্রতিনিধি) গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়িতে পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য স্কুল শিক্ষিকা সহোদর বোনকে স্বাসরোধ করে হত্যার চার বছর পর হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে গাজীপুর পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এঘটনায় জড়িত ভাতিজাকে গ্রেফতারের পর আদালতে নিজেকে ও অন্যান্য জড়িত আসামীদের বিষয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালতের নির্দেশে আসামীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।নিহতের নাম মমতাজ বেগম। তিনি ঢাকার তেজগাও নাখালপাড়া এলাকার অরঙ্গজেবের স্ত্রী এবং নাখালপাড়া এলাকার হলি মডেল কিন্ডারগার্ডেন ইংলিশ বেইজড বাংলা মিডিয়াম স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা ছিলেন।গ্রেফতার আসামীর নাম উচ্ছাস সরকার (৩০)। তিনি গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি থানার বাঘিয়া এলাকার মো: দুলাল সরকারের ছেলে।মঙ্গলবার বিকালে এসব তথ্য জানিয়েছেন গাজীপুর পিবিআই এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান।তিনি আরো জানান,নিহত মমতাজ বেগম, দুলাল সরকার ও রশিদ সরকার সহোদর ভাই বোন। তাদের পিতার মৃত্যুর পর ভাইয়েরা বোনকে তার ন্যায্য উত্তরাধীকার দিচ্ছিল না। এ নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে দেন দরবার চলছিল।পুলিশ সুপার আরো জানান, পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে আলোচনার জন্য ভাইদের আহবানে সাড়া দিয়ে ২০১৯ সালের ১ মার্চ বিকেলে মমতাজ বেগম বাঘিয়া এলাকার বাবার বাড়ি তথা ভাই রশিদ সরকারের বাড়িতে আসেন। পরের দিন সকাল আটটার দিকে মমতাজের চাচাতো বোন আম্বিয়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মমতাজের মেয়েদেরকে জানান, বাঘিয়া ডিসপুকুর পাড়ার মন্ডল বাড়ির পার্শ্বের ইটের দেয়াল বেষ্টিত শফিউল্লাহর পরিত্যাক্ত বাড়ির ফাঁকা জায়গায় মমতাজ বেগমের লাশ পাওয়া গেছে। পরে এই ঘটনায় ওই বছরের ৩ মার্চ তার বড় মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মৌ বাদী হয়ে কোনাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।কোনাবাড়ী থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করার পর এর তদন্তভার গাজীপুরের পিবিআইকে দেওয়া হয়। গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে বাঘিনা এলাকা থেকে আলোচিত স্কুল শিক্ষিকা মমতাজ বেগম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি উচ্ছাস সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেফতারকৃত আসামির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরো জানান, ওই দিন মমতাজ বেগম সন্ধ্যার পর ভাই আব্দুর রশিদ সরকারের বাড়িতে পৌছান। পরে মমতাজ বেগম এবং আব্দুর রশিদ ও তার পরিবারের সদস্যগণ জমিজমা ও টাকা পয়সা নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনার একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ বোন মমতাজ বেগমকে কোন টাকা না দিয়ে স্ট্যাম্পে জোরপূর্বক স্বাক্ষর করার জন্য বলপ্রয়োগ এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এ সময় মমতাজ বেগমকে রশিদের ছেলে নিলয় সরকার, রশিদের ভাতিজা উচ্ছাস সরকার, আব্দুর রশিদ ও নিলয় সরকারসহ অন্যান্য সহযোগীরা মিলে স্বাসরোধ করে হত্যা করে।পরে প্রতিবেশী মন্ডল বাড়ির লোকজনকে ফাসানোর জন্য লাশ ওইস্থানে ফেলে রাখে। কারণ মন্ডল বাড়ির সাধু হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী রশিদের পরিবাদের সদস্যরা।তিনি আরো জানান, তদন্তকালে উচ্ছাস সরকারকে ১২ মার্চ দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাঘিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে ১৩ মার্চ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে সে নিজেকে ও অন্যান্য জড়িত আসামীদের বিষয়ে বর্ণনা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।