মোঃ রবিউল ইসলাম, জামালপুর জেলা প্রতিনিধি :
কৃষি এ দেশের অর্থনীতির এক অতি গুরুত্বপূর্ণ খাত। বর্তমানে দেশে জিডিপির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্জিত হয় কৃষি খাত থেকে। তার চেয়েও বড় কথা কৃষি এ দেশের জনমানুষের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা প্রদানের প্রধানতম এবং অন্যতম উৎস। এখনও এ দেশের বিপুল জনসংখ্যার কর্মসংস্থানও হয়ে থাকে কৃষিকে অবলম্বন করেই। ফলে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, জীবনযাত্রায় মানোন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হলে কৃষিক্ষেত্রে যে অধিকতর মনোযোগ দিতে হবে তা ভেবেই বর্তমান সরকার কৃষকদের কৃষি প্রণোদনা সহ
নানা ভাবে সুযোগ-সুবিধা প্রদান করে আসছে। কিন্তু সরকারের এমন সুচিন্তা কিছু অসাধু, সুবিধাভোগী দূর্নীবাজরা নিজেরা নিজেদের জন্য সুবিধা বানিয়ে গরীবের সাথে প্রতারণা করে আসছে। কৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার বিতরণে
ঠিক এমন চিত্রই দেখা গেছে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলাতে।
এখানে প্রাণঘাতী করোনায় লকডাউনে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় গরীব কৃষকদের মাঝে সরকারি বরাদ্দকৃত কৃষি প্রণোদনা বীজ ও সার বিতরণ করার নির্দেশনা থাকলেও প্রকৃত কৃষকেরা এমন সুবিধা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত কৃষকদের কাছ থেকে।
রোববার(৫ জুলাই)দিনব্যাপী কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। বিতরণকৃত পণ্যাদির মধ্যে ছিল হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধানের বীজ এবং ডিএপি ও পটাশ সার।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ৭০০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয় ২কেজি হাইব্রিড ধানের বীজ(এজেট-৭০০৬), ২০কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি পটাশ এবং ৩৫০ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হয় ২ কেজি উপশী ধানের বীজ, ১০কেজি ডিএপি ও ১০কেজি পটাশ সার।
কিন্তু তৃণমূল কৃষকদের হতাশা ভরা আপসোস ,উপজেলায় মোট ১০৫০ জন কৃষকের মাঝে এ প্রণোদনা বিতরণ করা হলেও প্রকৃত কৃষকেরা পায়নি এ সুবিধা।
জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা কৃষকদের কাছ থেকে এনআইডি ও ছবি নিয়ে বীজ ও সার উত্তোলন করে সিন্ডিকেট বেপারীদের কাছে বিক্রি করে এবং বেপারীরা এসব কৃষি প্রণোদনার বীজ ও সার নিয়ে আরামনগর বাজারে বীজ সার ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে। সরেজমিনে দেখা যায়, আনিছুর রহমান ট্রেডার্স ও হাসি ট্রেডার্সে এসব সরকারি কৃষি প্রণোদনা পণ্য অবাদে বিক্রি করছে বেপারিরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক কৃষকই বলেন, উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর হতে যে সমস্ত বীজ বিনামূল্যে প্রণোদনা হিসেবে বিতরণ করা হচ্ছে ,তা খুবই নিম্নমানের। বলতে গেলে তারা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের অজুহাত দিয়ে পাশকাটিয়ে যান বলে জানান।
এদিকে কৃষকেরা আরও বলেন জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে কখন বীজ ও সার উত্তোলন করেন , তারা তার কিছুই জানেন না। তবে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে এ সিন্ডিকেট এর সাথে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কিছু অসাধু ব্যক্তি জড়িত আছে।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, জনপ্রতিনিধিরা যেভাবে আমাদের লিস্ট দেন। সেভাবেই আমরা বিতরণ করি। এখানে আমাদের কিছুই করণীয় নাই । নিম্নমানের বীজের কথা বললে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।