জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ভূঁয়া ডাক্তারকে আটক করেছে রেব-১৪ জামালপুর।
গতকাল ২৬ মে (মঙ্গলবার) উপজেলার ৫নং ওয়ার্ড কামরাবাদ গ্রামে পুরাতন পল্লীবিদ্যুৎ অফিস সংলগ্ন প্রধান সড়কের পাশে তার ফার্মেসী হতে বেলা ১.০০টায় তাকে আটক করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ভুঁয়া ডাক্তার জামালপুর সদর পৌরসভার সাতপাইকা গ্রামের জিন্নত আলীর ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম(৫০)।
জানা যায়, গত ২১মে (শুক্রবার) জামালপুর থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি কামরাবাদ গফুর উকিলের বাসা বাড়া নিয়ে সেখানে ফার্মেসী খুলেন। সামনে তিনি নিউ মডেল ফার্মেসী, ডাঃ মোহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন নামে একটি সাইনবোর্ড
ঝুলান।
প্রকৃতপক্ষে এই নামে কোনো ডাক্তার ভেতরে বসে না। সেই উল্লেখিত পোষ্টারের ঠিকানা ও ডাক্তার দুটোই ঠিক নেই। পরে তিনি (জাহাঙ্গীর আলম) রোগী পাওয়ার জন্য স্থানীয় ৬ জন মহিলাকে প্রতি মাসে দু-হাজার টাকা করে দেয়ার শর্তে নিয়োগ দেন। তিনি নিজে এবং তার কর্মীদের নিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে একজন বিদেশ থেকে পড়াশোনা করে আসা ডাক্তার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন এবং বাংলাদেশের চিত্রনায়িকা মৌসুমীর ব্যক্তিগত ডাক্তার হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন বলে জানান।
পাশাপাশি তার ফার্মেসীতে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা, জামালপুর এবংকি জার্মান থেকে বড় বড় ডাক্তার আসে বলে মিথ্যা আশ্বাস দেন। ২৪ ঘন্টায় যেকোনো কঠিন রোগ ভাল করে দিবে বলে প্রচারণা চালায়। এভাবে গ্রামের সাধারণ মানুষকে তার চেম্বারে এনে বিভিন্ন কঠিন রোগ হয়েছে বলে ভয় দেখিয়ে ডাঃ প্রিয়া ঘোষ নামে এক বড় ডাক্তারের প্যাডে
মোটা অংকের টাকার প্রেসক্রিপশন করেন।
ওষুধের প্রকৃতমূল্য মুছে দিয়ে নিজের ইচ্ছেমত চড়া মূল্য বসিয়ে গ্রামের সহজ সরল লোকদের সাথে প্রতারণা করেন৷ ৫০০ থেকে শুরু করে ১৪ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নেয়ার প্রমাণ মেলে।
পরিশেষে নিজেকে একজন পল্লী চিকিৎসক হিসেবে তুলে ধরলেও কোনো ধরনের ডাক্তারি সনদ ও ফার্মেসীর ট্রেড লাইসেন্স তার নিকট থেকে পাওয়া যায়নি। বরং তার নিকট থেকে বিভিন্ন ভেজাল মিশ্রিত ঔষধ পাওয়া যায়।
সরাসরি এই ভূয়া ডাক্তার এর সাথে কথা বললে তিনি আর্থিকভাবে অভাবে পড়ে এমন রাস্তা বেছে নিয়েছে বলে জানান।
পরে ঘটনাস্থল থেকে রেব -১৪ জামালপুরকে ফোন দিলে তারা এসে উপরোক্ত ঘটনার সত্যতা পান এবং সাথে সাথে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যান।