মাজহারুল ইসলাম বাদলঃ- স্টাফ রিপোর্টার।
মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে রোববার (২৮ মার্চ) ভোর থেকেই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা।
মহাসড়কটির সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক, সানারপাড়, সাইনবোর্ড, শিমরাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকেই রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে আগুন দিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে অবরোধকারীরা। এসময় পুলিশ তাদেরকে বাধা দিলে শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ। পুলিশের সাথে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। সকাল-সন্ধ্যা হরতালকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় পুলিশের সাথে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে ১২ ঘন্টায় ১৮টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিকেল সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বিকেলবেলা এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন জেলায় হতাহতের ঘটনার প্রতিবাদে গত রোববার দেশব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। হরতালকে কেন্দ্র করে গতকাল রোববার ভোর থেকেই সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে অবস্থান নেয় হেফাজতকর্মীরা। এদিকে বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ও মাদানীনগর মাদ্রাসার সামনে পুলিশ ও র্যাব বিক্ষোভ কারীদের ধাওয়া দিলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশও পাল্টা গুলি নিক্ষেপ করে। এতে হৃদয় (২১), সাজ্জাদ (১৬), সেলিম (২৮), ওসমান (২৭), শফিকুল ইসলাম (৬৫) নামে একজন পল্লি চিকিৎসকসহ আরো বেশ কয়েকজনের গুলিবিদ্ধের খবর পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে বিকেল সাড়ে ৫টায় পুলিশ ও র্যাব রাস্তায় আটকে থাকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে চাইলে ফের বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশ ও র্যাবের সংঘর্ষ বাধে। এতে করে রাস্তায় থেমে থাকা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। পুড়িয়ে দেয়া গাড়ির মধ্যে ৮টি বড় কাভার্ডভ্যান, ৪টি মাঝারি ট্রাক, ৩টি বাস ও ৩টি প্রাইভেটকার। রাত ১২টার দিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের অংশে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ১৮টি গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে সকালে ৪টি ও সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত ১৪ টি।
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ প্রায় সাড়ে ৪ হাজার রাউন্ড ফাঁকা গুলি চালিয়েছেন। হরতালে বিক্ষোভকারীদের সাথে সংঘর্ষে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শরীফ আহমেদ জানান, মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।