• শনিবার, ২৫ মার্চ ২০২৩, ০২:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
আজকের আকাশের চাঁদ লালমোহনে জমি বিরোধে বৃদ্ধা মা ও ছেলেকে হত্যা চেষ্টা! ৩৮কেজি গাঁজা সহ ০১মাদক কারবারী আটক করেছে র‍্যাব-১৪ ফরিদগঞ্জে মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি কেড়ে নিল ২ বন্ধুর প্রাণ স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে দলিত পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর মতবিনিময় সভা- কোন মায়ায় তুমি বেঁধেছো প্রেমিকেরে? মাহফুজ আলী কাদেরীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারকারীদের গ্রেপ্তারের দাবীতে পাবনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়নের মানব বন্ধন অনুষ্ঠিত লৌহজংয়ে চার প্রতিষ্ঠানকে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা   লৌহজংয়ে ভূমিহীন-গৃহহীন ৪৫ পরিবারের মাঝে জমি ও গৃহ হস্তান্তর মাধবপুরে পবিত্র রমজান উপলক্ষে অসহায়দের মাঝে ইফতার”খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম-পেয়েছি কি? আছে কি?

দৈনিক আমাদের সংগ্রাম | পত্রিকা..... / ৫৮ জন পড়েছে
প্রকাশিত সময়: শুক্রবার, ২৬ মার্চ, ২০২১

সালাহ উদ্দিন সৈকত(গাজীপুর প্রতিনিধি)

 

‘হুব্বুল ওয়াতানে মিনাল ইমান’ অর্থাৎ দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ- এ অনিবার্য নীতিবাক্যের আওতায় আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে এ দেশীয় সভ্যতা ও সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাস এবং স্বাতন্ত্র্যবোধ নির্মাণে যারা অবদান রেখেছেন, তাদের সবার প্রতি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ আর স্বাধীনতার বিজয়ের এই মাসে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।বিশেষ করে কবির ভাষায় ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে’ দেশের মুক্তিসংগ্রামকে যারা সাফল্যের চূড়ায় নিয়ে গেছেন, যাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে,আলাদা ভূখণ্ড, ভিন্ন মানচিত্র,পৃথক জাতিসত্তা, লাল সবুজের পতাকা ও স্বতন্ত্র জনগোষ্ঠী পেয়েছি- তাদের সবার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করি।সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,ইতিহাসের কিংবদন্তির মহানায়ক ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মহান স্মৃতির প্রতি অজস্র শ্রদ্ধা নিবেদন করি এজন্য যে,তার সুযোগ্য নেতৃত্বেই অবহেলিত,বঞ্চিত ও উপেক্ষিত বাঙালি জাতি তার বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছে, আমরা জাতি হিসেবে স্বাধীন পরিচয় লাভ করেছি এবং বিশ্বসভায় বাঙালি জাতি তার আত্মমর্যাদাবোধ প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে।বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমরা ঋণী এ কারণেও যে,সমগ্র বিশ্বে তিনি গর্বভরে পরিচয় দিয়ে বলতেন,আমি বাঙালি,আমি মুসলমান।একই সঙ্গে তিনি এদেশে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার সুরক্ষায় আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন।

ইসলামের মহান পয়গম্বর হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কাছে তার জন্মভূমির গুরুত্ব ও মর্যাদা ছিল অপরিসীম। ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখি,তিনি যখন আরবের অবিশ্বাসীদের ষড়যন্ত্রের মুখে মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে উদ্যত হলেন,তখন মদিনাপানে যাত্রার প্রাক্কালে জন্মভূমি মক্কার জন্য তার হৃদয় বিগলিত হচ্ছিল।বারবার তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে যাচ্ছিলেন এবং খানায়ে কাবার দিকে দৃষ্টিপাত করছিলেন। মক্কার পাহাড়-পর্বত আর বৃক্ষলতার পানে বারবার তাকাচ্ছিলেন।তিনি বলছিলেন- হে কাবা, তুমি কত সুন্দর,তুমি কত মর্যাদাবান;ওহে মক্কা শহর, তোমায় আমি অনেক ভালোবাসি,কিন্তু আমার জন্মভূমির লোকেরা তোমায় ছেড়ে যেতে আমায় বাধ্য করেছে।জন্মভূমির জন্য হৃদয়ের এই টান ছিল রাসুলের (সা.) স্বভাবজাত।এমনকি মদিনায় যাওয়ার পরেও কখন বা কতদিনে তিনি আবারও বিজয়ীর বেশে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করবেন,সেজন্য সর্বদাই ব্যাকুল থেকেছেন।প্রচণ্ড ক্ষমতা হাতে পেয়েও মক্কা বিজয়ের পর মাতৃভূমির কাউকে অত্যাচার করেননি,কাউকে কষ্ট দেননি, বাড়ি থেকে বের করে দেননি এবং কাউকে কোনো শাস্তি দেননি।

বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও আত্মমর্যাদাশীল দেশ।যারা দেশকে ভালোবাসবে,দেশের জন্য কাজ করবে,দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখার প্রত্যয়ে ব্রতী হবে- ইসলামে তাদের গুরুত্ব অপরিসীম।দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে যারা নিজেদের নিয়োজিত রাখবে,তাদের জন্য হাদিসে বিশেষ পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে।যারা অকাতরে দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দেবে,ইসলাম তাদের শাহাদাতের মর্যাদা দান করেছে।

ইসলামে দেশপ্রেমের তাৎপর্য একটু ভিন্ন ও ব্যতিক্রম।এখানে দেশপ্রেমের অর্থ শুধু দেশকে ভালোবাসার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।বরং দেশ থেকে সব অন্যায়, দুর্নীতি আর পাপাচারের মূলোৎপাটন করে একটি আদর্শস্থানীয় দেশে রূপান্তরের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে যার যার জায়গা থেকে সাধ্যমতো প্রয়াস অব্যাহত রাখা।দেশের উন্নয়ন, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি গঠন এবং দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় যথাযোগ্য ভূমিকা পালন করাই একজন ইমানদার নাগরিকের মূল কাজ। একটি দেশে জাতি,ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে সমান নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করবে- এটাই ইসলামের মহান শিক্ষা।সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘু হিসেবে নয় বরং দেশের নাগরিক হিসেবে এবং স্রষ্টার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ হিসেবে সবাইকে মূল্যায়ন করাই একজন দেশপ্রেমিকের দায়িত্ব। ঐক্য,সংহতি,সহনশীলতা,পরমতসহিষ্ণুতা,উদারতা, ন্যায়পরায়ণতা,সংযম, শান্তিকামিতা- এগুলো হচ্ছে একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের অনিবার্য গুণ।দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নতি ও সমৃদ্ধির স্বার্থে সবাইকে এসব গুণের ধারক হয়ে দেশমাতৃকার কল্যাণে কাজ করতে হবে। স্বদেশের প্রতি শাশ্বত ও চিরন্তন ভালোবাসার দিকনির্দেশনা রয়েছে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে।মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করো এবং তোমাদের ন্যায়পরায়ণ শাসকের আদেশাবলি মেনে চলো (সুরা নিসা-৫৯)।’ রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে চোখ দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য জাগ্রত থেকে পাহারা দেয়, সে চোখ জাহান্নামের অগ্নি স্পর্শ করবে না।’ ‘দেশের সুরক্ষার জন্য এক দিন ও রাতের পাহারা লাগাতার এক মাস সিয়ামব্রত পালন এবং দিবারাত্রি এবাদতের চাইতেও উত্তম।’

ইসলামের ইতিহাসে ধর্মীয় অনুশাসন পালন ও স্বাধীন মতপ্রকাশের জন্য যেমন মদিনা নামক স্বাধীন ও নিরাপদ ভূখণ্ডের প্রয়োজন ছিল, ঠিক তেমনি মহানবী (সা.)-এর নেতৃত্বে মদিনার সব অধিবাসী মিলে সেই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন ও নিরাপত্তা বিধানও করেছেন।একইভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্যও প্রয়োজন আমাদের সবার অংশগ্রহণে দেশটিকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত করে উন্নত-সমৃদ্ধ এবং আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে একে গড়ে তোলা;স্বাধীনতার এই মহান মাসে এটিই হোক আমাদের দৃপ্ত অঙ্গীকার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
❌ নিউজ কপি করা নিষিদ্ধ ❌